ঘাড় ব্যথার কারণগুলোর মধ্যে স্পন্ডাইলোসিস বা ঘাড়ের হাড় ক্ষয় অন্যতম। যারা ডেস্কে বসে কাজ করেন, যেমন- ব্যাংকার, কম্পিউটার ব্যবহার বেশি করেন এমন লোকের ঘাড় ব্যথা বেশি হয়। যারা ঘরের কাজ যেমন- কাপড় ধোয়া, ঘর মোছা বা রান্না করার মতো কাজ করেন তারাও ঘাড় ব্যথায় আক্রান্ত হন। আশার কথা হল ঘাড় ব্যথায় আক্রান্ত রোগীদের সুস্থ হওয়ার হার কোমর, হাঁটু বা অন্যান্য শারীরিক ব্যথাক্রান্ত রোগীদের চেয়ে অনেক বেশি।
Advertisement
লক্ষণ ও প্রকারভেদ
ব্যথা ঘাড় থেকে হাতে চলে যায়। অনেকের হাতে ঝিঁঝি ধরে। পিঠে বুকে ব্যথা ছড়িয়ে পড়ে। ঘাড় ডানে-বামে বা সামনে পেছনে ঝোঁকাতে কষ্ট হয়। অনেকে ওপরের দিকে তাকাতে পারেন না। অনেক রোগীই বলে থাকেন তাদের কোনো কোনো আঙুল অবশ লাগছে বা ঠিক বোধ পাচ্ছেন না। সকালে ঘুম থেকে উঠে অনুভব করেন তার একটি হাত ঝিঁঝি লেগে আছে অথবা ঝিঁঝি লাগার কারণে মধ্যরাতে ঘুম ভেঙে গেছে।
এসব সাধারণ (কমন) উপসর্গ ছাড়াও অনেক রোগীই মাথা ঘোরা, মাথাব্যথা বা বুকে ব্যথার কথা অভিযোগ করে থাকেন। এমনও রোগী আছে যারা বুক ব্যথার সঠিক কারণ নির্ণয় করতে না পেরে নিজেকে হৃদরোগী ভাবেন। অথচ অনেক ক্ষেত্রেই সামান্য একটি এক্স-রে করে দেখা যায় তিনি ঘাড়ের হাড় ক্ষয় রোগে ভুগছেন। একইভাবে মাসের পর মাস মাথা ঘোরা রোগের ওষুধ খেয়ে উপকার না পেয়ে পরে স্পন্ডাইলোসিস শনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যাও নেহাত কম নয়। তাই রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে সাবধান হওয়া জরুরি।
চিকিৎসা
স্পন্ডাইলোসিসের সবচেয়ে কার্যকরী চিকিৎসা আইপিএম। কারণ নির্ণয় হওয়া মাত্রই চিকিৎসা শুরু করতে হবে। ব্যথা বা অন্যান্য উপসর্গ সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত আইপিএম চালিয়ে যেতে হবে। নিয়ম মেনে চলাও চিকিৎসার সমান গুরুত্বপূর্ণ। সামনে ঝুঁকে কাজ না করা, পাতলা বালিশে ঘুমানো, সমান বিছানা ব্যবহার স্পন্ডাইলোসিস রোগীদের কষ্ট দ্রুত দূর করবে। ডায়াবেটিস, গ্যাস্ট্রিক আলসার এবং কিডনি রোগে আক্রান্তরা ব্যথানাশক ওষুধ সেবন থেকে বিরত থাকুন।
জটিলতা
ফ্রোজেন সোল্ডার স্পন্ডাইলোসিসের অন্যতম প্রধান জটিলতা। তা ছাড়া রোগ জটিল আকার ধারণ করলে হাত শুকিয়ে যাওয়া বা আঙুল অবশ হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে পারে। তাই দ্রুত সারভাইক্যাল স্পন্ডাইলোসিসের চিকিৎসা নিন।