খেলাধুলাজনিত আঘাত - Sports Injury Pain

স্পোর্টস ইনজুরি

খেলাধুলার সময় যেকোনো খেলোয়াড় ইনজুরিতে পড়তে পারে। তবে কিছু খেলায় ইনজুরি বেশি হয়। যেমন- ফুটবলাররা হাঁটু ও পায়ের গোড়ালির ইনজুরিতে বেশি ভোগে। আবার ক্রিকেটে ফাস্ট বোলাররা বেশি ভোগে কাঁধের ইনজুরিতে।

টেনিস এলবো : হাতের এক্সটেনসর টেন্ডনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার জন্য কনুইয়ের বাইরের দিকে ব্যথা হয়। টেনিস খেলোয়াড়দের ব্যাকহ্যান্ড স্ট্রোক নেওয়ার সময় এই ইনজুরি বেশি হয় বলে এর নামকরণ করা হয়েছে টেনিস এলবো। অন্যদেরও এ ইনজুরি হতে পারে।
গলফারস এলবো : কনুইয়ের ভেতরের দিকে ব্যথা হয় হাতের ফ্লেক্সর টেন্ডনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার জন্য।গলফ খেলোয়াড়দের এই ইনজুরি বেশি হয়।
লাম্বার স্প্রেইন : ভারোত্তলনের মতো খেলা যেখানে মেরুদণ্ডের ওপর হঠাৎ বেশি চাপ পড়ে অথবা গলফ বা ব্যাডমিন্টন যেখানে খেলার সময় মেরুদণ্ড মোচড় খায় বা টুইস্টিং হয়, সেসব ক্ষেত্রে লাম্বার স্প্রেইন বেশি হয় এবং পিঠের নিচের অংশে ব্যথা হয়।

জাম্পার্স নি : যেসব খেলায় শক্ত ভূমির ওপর বারবার লাফাতে হয় যেমন-বাস্কেট বল, তাদের জাম্পার্স নি বেশি হয়। বারবার লাফানোর ফলে প্যাটেলার (হাঁটু) টেন্ডনে প্রদাহ তৈরি হয়।

একে প্যাটেলার টেন্ডোনাইটিসও বলে।

রানার্স নি : দৌড়বিদরা যখন দৌড়ায় তখন ফিমার (উরু) এবং প্যাটেলার বারবার ঘর্ষণের ফলে যে ব্যথা হয় তা রানার্স নি নামে পরিচিত।
স্ট্রেস ফ্র্যাকচার : অতিরিক্ত খেলার জন্য হাড়ে স্ট্রেস ফ্র্যাকচার বা চাপজনিত ফাটল দেখা দিতে পারে। এটা সাধারণত দেখা যায় ফুটবলার ও হার্ডলারদের মধ্যে। পায়ের মেটাটারসাল নামের হাড়গুলোতে স্ট্রেস ফ্র্যাকচারের ঝুঁকি বেশি।

ডিসলোকেশন : ডিসলোকেশন মানে হাড়ের জয়েন্ট জায়গা মতো না থাকা। কাঁধে সাধারণত ডিসলোকেশন বেশি হয়। আর এই ইনজুরিতে বেশি ভোগে রাগবি ও ফুটবল খেলোয়াড়রা।

  • সাধারণত নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর যদি হ্যাঁ হয়, তাহলে ধরে নেওয়া হয় ইনজুরির সমস্যা আছে। যেমন-খেলতে গেলে ব্যথা হচ্ছে, হাড় নড়ে গেছে, খেলায় আগের মতো পারফর্ম করতে পারছে না, সমস্যা আস্তে আস্তে বাড়ছে, আঘাত পেয়েছে ইত্যাদি।

    আঘাত যে শুধু খেলার সময় লাগে তা নয়, ট্রেনিং নেওয়ার সময়ও লাগতে পারে। কখনো কখনো অসম্পূর্ণ বা মাত্রাতিরিক্ত ট্রেনিং ইনজুরির কারণ হতে পারে। কিছু রুটিন রক্ত পরীক্ষার পাশাপাশি ফ্র্যাকচার বা ডিসলোকেশন দেখার জন্য এক্সরে করা দরকার হতে পারে। যদি সফট টিস্যু বা মাংসপেশির ইনজুরি হয়, সে ক্ষেত্রে এমআরআই লাগতে পারে।

ওষুধ ব্যবহার করার ক্ষেত্রে খেলোয়াড়দের বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে ওষুধ ব্যবহার নিয়ে নির্দিষ্ট বিধিমালা ও নির্দেশনা দেওয়া আছে। বিশেষ করে যেসব ওষুধ খেলায় প্রভাব ফেলে সেসব ওষুধ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে প্যারাসিটামল বা ব্যথানাশক ওষুধ ইনজুরিতে ব্যবহার করা যায়। আকস্মিক ইনজুরির ক্ষেত্রে প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে RICE থেরাপি দেওয়া হয়। RICEমানে হচ্ছে-

R মানে রেস্ট : দেহের যে অংশে ইনজুরি হয়েছে সেই অংশকে বিশ্রাম দিতে হবে। কখনো কখনো খেলোয়াড় বিশ্রাম না নিয়ে খেলে যায়। এটা ভবিষ্যতে আবারও ইনজুরিতে পড়ার ঝুঁকি বহুলাংশে বাড়ায়।

I মানে আইস : আইস বা বরফ ব্যথা কমায়, ফুলে যাওয়া ও রক্তপাত বন্ধ করতে সাহায্য করে।

C মানে কম্প্রেশন : কম্প্রেশন বা চাপ দিয়ে আক্রান্ত স্থান ধরে রাখলে বা ব্যান্ডেজ করলে ওই জায়গাটা ফুলতে পারে না। যা দ্রুত রোগ সারাতে সাহায্য করে।

E মানে এলিভেশন : এলিভেশন মানে উঁচু করে রাখা। আঘাতের জায়গাটা উঁচু করে রাখলে সেখানে রক্ত জমে থাকতে পারে না এবং ধীরে ধীরে রক্তপ্রবাহ আগের মতো স্বাভাবিক হয়ে যায়।

যেকোনো স্পোর্টস ইনজুরির জন্য ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন স্পেশালিস্টকে দেখানো উচিত। শল্যচিকিৎসার দরকার হলে অর্থোপেডিক ডাক্তার দেখাতে হবে। দেশের সব হাসপাতালে স্পোর্টস ইনজুরির চিকিৎসা সহজলভ্য নয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগে স্পোর্টস মেডিসিন স্পেশালিস্ট আছেন। ইনজুরি আক্রান্ত যে কেউ এই বিভাগে এসে চিকিৎসা নিতে পারেন।

* প্রাথমিক অবস্থায় আঘাতের জায়গায় গরম ছেঁক দেওয়া বা ম্যাসাজ করা যাবে না, কারণ এটা করলে ব্যথা না কমে বরং বেড়ে যেতে পারে।

* আক্রান্ত অংশের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত সব ধরনের খেলাধুলা থেকে বিরত থাকতে হবে রিহ্যাবিলিটেশন বা পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত।

পিআরপি সম্পর্কিত ভিডিওসমূহ! ​

1 Videos
0 + পেশেন্ট

পিআরাপি সেবা নিয়েছেন

পেশেন্ট রিভিও
Test 1
Test 1
@teest1
khub valo treatment
test2
test2@username
excellent
Test 3
Test 3
@test 3
Yes recommended