হিপ জয়েন্ট শরীরের বড় ও ওজন বহনকারী জোড়াগুলোর মধ্যে অন্যতম। দাঁড়াতে, হাঁটতে, দৌড়াতে এবং উঠা নামা করতে হিপ জয়েন্ট এর একান্ত প্রয়োজন। উরুর হাড়ের বল (ফিমোরাল হেড) ও কটি’র জোড়া (এসিটাবুলাম) সমন্বয়ে জোড়া গঠন করে বলেই এ জোড়ায় বিভিন্ন ধরনের নড়াচড়া হয়। হিপ জয়েন্ট এর বিভিন্ন রোগের মধ্যে অসটিওনেকরোসিস বেশী পরিলক্ষিত হয়। যে কোন কারনে জোড়ার বল (ফিমোরাল হেড) অংশে রক্ত চলাচল বন্ধ হলে অসটিওনেকরোসিস হয়। রক্ত চলাচল বন্ধ হলে হাড়ের কোষগুলো অস্থিমজ্জাসহ মরে যায় এবং অবশেষে টিস্যু গুলো নিঃশেষ হয়ে যায়। ফলে হাড়ের (বল) ফ্র্যাকচার হয় এবং এবরো থেবরো আকৃতি ধারন করে। এ অবস্থায় বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয় এবং ব্যথা এদের মধ্যে অন্যতম।
রোগের কারণ সমূহঃ
প্রধান কারন হলো আঘাত; এ ছাড়াও স্টেরয়েড ও এলকোহল সেবন, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তনালীর খিচুনি, প্রদাহ ও বন্ধ হয়ে যাওয়া, রক্ত শূন্যতা (সিকেল সেল এনিমিয়া), কেইসন ডিজিজ এবং বিকিরন (রেডিয়েশন)।
লক্ষণ সমূহঃ
এ রোগে আক্রান্ত রোগীদের ২৫% ক্ষেত্রে তিন বৎসরের মধ্যে কোন উপসর্গ না থাকতে পারে। ৭৫% রোগী শুরুতে উপসর্গ নিয়ে আসে। উপসর্গের মধ্যে প্রধান হলো ব্যথা। ব্যথা সাধারণত হিপ জয়েন্ট এর সামনে (কুচকিতে) অনুভূত হয়। অনেক সময় ব্যথা পিছনে (নিতম্বে) অনুভূত হতে পারে। এ রোগের জন্য হাঁটুও ব্যথা করে। অনেক সময় রোগী শুধু হাঁটু ব্যথা নিয়ে ডাক্তারের শরণাপন্ন হন। আস্তে আস্তে হিপ জয়েন্ট এর নড়াচড়া সীমিত হতে থাকে, জোড়া নড়াচড়া করলে তীব্র ব্যথা হয় এবং পায়ে ভর দেওয়া যায় না। জোড়ার পেশিগুলো শুকিয়ে শক্তি কমে যায়। দীর্ঘদিন চলতে থাকলে হাড় ও তরুণাস্থির ক্ষয় হয় এবং অতিরিক্ত হাড়সহ অসটিওআর্থ্রাইটিস হয়। অবশেষে জোড়া জমে যায়।
চিকিৎসাঃ
চিকিৎসার শুরুতে রোগের তীব্রতা নির্ণয় ও কারণ অনুসন্ধান করতে হবে। আবার চিকিৎসা ব্যবস্থা রোগীর বয়সের তারতম্যের উপর নির্ভর করে। প্রাথমিক অবস্থায় হাড়ের নেক্রোজড অংশ কিউরেট করে ছোট ছোট হাড়ের টুকরা (চিপস গ্রাফট) জোড়ার বল অংশে প্রবেশ করিয়ে দিলে উপসর্গ লাঘব হয় এবং নতুন হাড় বৃদ্ধি পেয়ে ক্ষয় পূরণ করে। রোগের মধ্য অবস্থায় হাড় কেটে ওজন বহনকারী অংশের অবস্থান পরিবর্তন করা যেতে পারে। হাড়ের বল অংশ (ফিমোরাল হেড) যদি ফ্র্যাকচার হয়। এবং এবরো থেবরো আকৃতি ধারন করে তাহলে জোড়া পুনঃস্থাপন করতে হবে।